চোপড়ায় বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিচারের নামে মহিলাকে মধ্যযুগীয় নির্যাতনের ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করল বিজেপি। সোমবার সকালে দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে মমতার ইস্তফা দাবি করেন দলের মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে তালিবানি শাসন জারি হয়েছে। তোষণ করতে করতে সংবিধান আর মানবাধিকার ভুলে গিয়েছেন মমতা।
আরও পড়ুন - বাংলায় তৃণমূল শরিয়া আদালত চালাচ্ছে, চোপড়ার ঘটনায় দাবি BJP নেতা অমিত মালব্যের
পড়তে থাকুন - স্কুলের নবীনবরণে ছাত্রদের জয় শ্রী রাম বলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ TMC নেতা শিক্ষকের বিরুদ্ধে
গৌরব ভাটিয়া বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গলরাজের আরেকটি নজির প্রকাশ্যে এসেছে। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় এক মহিলার সঙ্গে দুর্ব্যবহার হয়েছে। লাঠি দিয়ে তাঁকে পেটানো হয়েছে। সঙ্গে আরেক ব্যক্তিকেও মারা হয়েছে। এই ছবি সমস্ত চ্যানেলে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে। বড় প্রশ্ন হল, আমাদের দলের সভাপতি জেপি নড্ডা এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে উত্থাপন করেছেন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মত জানিয়েছেন।’
এর পরই ঘটনার বিবরণ দিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, ‘উত্তর দিনাজপুরে তৃণমূলের এক নেতা আছে, নাম তাজিমুল ওরফে জেসিবি। ইনি ভারতের সংবিধানে আস্থা রাখেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ইনি বলেন, দ্রুত ন্যায় দেব তালিবানি কায়দায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যের আর সংবিধানে আস্থা নেই। উনি নিজের পার্টির গুন্ডাদের ছাড় দিয়ে রেখেছেন যে শরিয়া আইন বলবৎ করো। তালিবানের রাজত্ব চলছে, খাতা না বই, মমতার গুন্ডারা যা বলবে তাই সই। প্রকাশ্যে উনি এক মহিলাকে লাঠিপেটা করছেন এবং এটা তখনই হতে পারে যখন আপনি তৃণমূল নেতা। কারণ তারা জানে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীরব সমর্থন রয়েছে। বাংলার জনতা মমতায় আতঙ্কিত। জঙ্গলরাজ দেখতে কেমন হয়? একেবারে মমতার রাজত্বের মতো দেখতে হয়। প্রত্যেকের জন্য এটা উদ্বেগের যে, একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, যার কাছে স্বরাষ্ট্র দফতর রয়েছে, তিনি নিজের পার্টির গুন্ডাদের খোলা ছাড় দিয়ে রেখেন। জনতার নিরাপত্তা নিয়ে ওনার কোনও চিন্তা নেই। তৃণমূল গুন্ডা নেতাদের নিরাপত্তা নিয়ে উনি ভাবিত।’
আরও পড়ুন - উনি 'বুলডোজার মাতা' হয়ে উঠেছেন, কাকে একথা বললেন সুকান্ত মজুমদার?
মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে গৌরব ভাটিয়া বলেন, ‘তাজিমুল ওরফে জেসিবি, যে মহিলাদের নির্যাতন করে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে খেলা করে সেই জেসিবি কোথায় রাখা থাকে? সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করে দেয় যে জেসিবি, তাকে রাখা থাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। কারণ এদেরই বিধায়ক হামিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছেন, মুসলিম দেশের নিয়ম এরকমই। হামিদুর রহমান কি আপনারই মতাদর্শকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সন্দেশখালিতে শাহজাহান দিয়েছেন আর উত্তর দিনাজপুরে ঔরঙ্গজেব তাজিমুল দিয়েছে। বিরোধী ‘ঘমন্ডিয়া’ যারা সংবিধান হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, পশ্চিমবঙ্গে যে তালিবানি বিচার হচ্ছে তারা কি তার সঙ্গে সহমত? এটা মহিলাদের সম্মানের প্রশ্ন, মানবাধিকারের প্রশ্ন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোষণের রাজনীতিতে এতটাই মগ্ন হয়ে গিয়েছেন যে সংবিধান ও মানবাধিকারের ব্যাপারে আপনার আর কোনও খেয়ালই নেই। পশ্চিমবঙ্গে আইন- শৃঙ্খলা বিধ্বস্ত, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনন্দে রয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবিলম্বে ইস্তফা দেওয়া উচিত।’