আজ, মঙ্গলবার ভোটগণনা শুরু হয়ে গিয়েছে গোটা দেশে। তবে বাংলার অধিকাংশ আসন কার কাছে যায় সেদিকেও নজর রয়েছে সকলের। বুথফেরত সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে বেশি আসন পাবে বিজেপি। যা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। কিন্তু এই আবহে বাংলা থাকছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই। যে সন্দেশখালিকে ইস্যু করে রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল বিজেপি। সেখানে কোনওরকম দাগ কাটতে পারল না গেরুয়া শিবির। কারণ এখানে এক লক্ষের বেশি ভোটে এগিয়ে আছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম।
এদিকে এই বিপুল পরিমাণ ব্যবধান কোনওভাবেই মেকআপ দেওয়া যে সম্ভব নয় তা স্পষ্ট বুঝতে পারছেন রেখা পাত্র স্বয়ং। তাই ভোটগণনার মাঝপথে গণনাকেন্দ্রে ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন তিনি। যদিও ফলাফলের আগে রেখা পাত্র বলেছিলেন, তিনি নিজের জেতার ব্যাপারে ১০০ শতাংশ আশাবাদী। কিন্তু ফলাফল এখনও পুরোপুরি না বেরলেও ছবিটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেসের হাতেই যেতে চলেছে এটা একেবারে স্পষ্ট। সন্দেশখালিতে নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। তা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতি, জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় হয়েছিল।
আরও পড়ুন: এবার নতুন পোর্টাল ‘জনমঞ্চ’ সামনে এল গণনার সময়, খুললেন বাংলার রাজ্যপাল
অন্যদিকে সেই সন্দেশখালির স্টিং অপারেশন ভিডিয়ো এবং অডিয়ো প্রকাশ্যে আসায় বিজেপির কাছে তা ব্যুমেরাং হয়েছিল। তারপরও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার লড়ে গিয়েছিলেন এই সন্দেশখালি ইস্যু নিয়ে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলায় এসে রেখা পাত্রকে শক্তিস্বরূপা বলেছিলেন। সন্দেশখালি ইস্যু বিজেপিকে ডিভিডেন্ট দেবে ভেবেছিলেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। সেখানে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের রেখাচিত্র স্পষ্ট হয়ে গেল।
এখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম দুপুর ১টা পর্যন্ত ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৪২০ ভোট পেয়ে এগোচ্ছেন। এখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে বলেছিলেন, হাজি নুরুল ইসলাম জিতলে তারপর তিনি সন্দেশখালিতে আসবেন। মানুষের কাছে আহ্বান করেছিলেন হাজি সাহেবকে জেতাতে। আর আজ ভোটবাক্স খুলতেই বোঝা গেল মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরই আস্থা রেখেছেন। এখানেই নামানো হয়েছিল এনএসজি থেকে রোবট চালিত যান। সিবিআই ক্যাম্প করে বসেছিল। শেখ শাহজাহান জেলে। এতকিছুর পরও বসিরহাট লোকসভা ধরে রাখতে পারছে না বিজেপি বলেই মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ বসিরহাটের যে মুসলিম ভোট সেটা পুরোটাই গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে। আর হিন্দু ভোটব্যাঙ্কেও থাবা বসাতে সমর্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস।