বিমান যাচ্ছিল, দিল্লি থেকে মুম্বইতে। দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানটি ওড়ার পরই মাঝ আকাশ থেকে একটি সিগন্যাল পাঠায় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (CTC)কে। যে সিগন্যালের ইঙ্গিত ছিল, কোনও কোনও হাইজ্যাকের ঘটনা। তড়িঘড়ি নিরাপত্তা প্রোটোকল সক্রিয় করা হয়। চাঞ্চল্য ছড়াতে থাকে।
সোমবার রাত ৮.৪০ মিনিটে দিল্লি থেকে উড়ে যায় মুম্বইগামী বিমানটি। আর মাঝ আকাশে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি থাকা অবস্থাতেই সেখান থেকে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে একটি সিগন্যাল আসে, যেখানে হ্যাইজ্যাক বা অপহরণের ‘অ্যালার্ট’ ছিল বলে খবর। মুহূর্তে নির্দিষ্ট প্রোটোকল বা প্রক্রিয়া মেনে, দিল্লি এটিসির তরফে গন্তব্যের বিমানবন্দরে বিষয়টি জানানো হয়। যার জেরে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা এজেন্সি ও বায়ুসেনাকে সজাগ করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে একটি সেন্ট্রাল কমিটিও গঠন হয়। যেখানে দিল্লি পুলিশ, সিআইএসএফ, এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া, ব্যুরো এফ সিভিল অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি, বায়ুসেনার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে পরে পাইলট জানান যে ওই অ্যালার্ট ‘ভুয়ো’ছিল। তবে তাতে প্রোটোকল-এ কোনও প্রভাব পড়েনি। এক প্রাক্তন এটিসি অফিশিয়াল বলছেন, ‘এটিসি কীভাবে ধরে নিতে পারে যে পাইলটকে বলার জন্য কেউ চাপ দিচ্ছে না… যে ফ্লাইটটিতে কিছুই হয়নি? যদি তিনি বন্দুকের মুখে থাকেন এবং তাঁকে তাই বলতে বলা হয়?’
( Bangladesh: বাংলাদেশের ৭ কলেজে ঢাবির আওতায় ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত শিক্ষা উপদেষ্টাকে ছাড়াই নেওয়া হয়? মুখ খুললেন ওয়াহিদ)
এদিকে, বিমানে তখন ১২৬ জন যাত্রী। আর তাঁদের সকলকে নিয়ে নিরাপতে বিমানটি মুম্বইতে অবতরণ করে। জানা যাচ্ছে, সেই সময় মুম্বই বিমানবন্দরে সম্পূর্ণ আপৎকালীন অবস্থা ঘোষিত ছিল। ততক্ষণে গঠন হয়ে গিয়েছে এয়রোড্রোম কমিটি। স্থানীয় পুলিশ, সংশ্লিষ্ট মহল, এনএসজি সমস্ত কিছু তথন সেখানে মোতায়েন হয়ে যায়। বিমানটিকে ‘আইসোলেশন বে’তে নিয়ে চলে যাওয়া হয়। তারপর ১ ঘণ্টা পরে তাকে 'ডিবোর্ড' করতে দেওয়া হয়। ততক্ষণে নিশ্চিত করা হয় যে, বিমানের মধ্যে সমস্ত কিছু ঠিক রয়েছে।
এদিকে, অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের তরফে এক অফিসার জানিয়েছেন যে, এয়ারলাইন্সের তরফে বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে। তদন্ত শুরু করে দিয়েছে ডিজিসিএ, সিআইএসএফ, বিসিএএস। মূলত, মনে করা হচ্ছে সেদিন কোনও ভুল সিগন্যালের জেরেই এই চাঞ্চল্য ঘটে। তবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, যে এই ভুল সিগল্যানল দেওয়ার নেপথ্যের কারণ কী হতে পারে! এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসার বলছেন,'সেটা পাইলটের ভুল ছিল , নাকি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার-এ যিনি সেই সময় দায়িত্বে ছিলেন, তিনি ইঙ্গিতকে ভুল বুঝেছেন, তা একমাত্র তদন্ত শেষ হলে জানা যাবে।'