কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার অভিশপ্ত দুপুরের দগদগে ক্ষত গোটা দেশের বুকে। নিরস্ত্রের ওপর সেই নারকীয় জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিসট্যান্স ফ্রন্ট’। তথ্য বলছে, পাকিস্তানের মদতপুষ্ট লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন এই দানবীয় জঙ্গি গোষ্ঠী। কাশ্মীরের বুকে কবে থেকে এই গোষ্ঠীর আস্ফালন শুরু হয়? কোন প্যাটার্ন নিয়ে এরা হানা দেয়? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরে যাওয়ার আগে দেখে নেওয়া যাক, কাশ্মীরে কী কী ঘটিয়েছে এই ‘দ্য রেজিসট্যান্স ফ্রন্ট’ বা টিআরএফ।
কাশ্মীরে জঙ্গি ত্রাসের অপর নাম ‘দ্য রেজিসট্যান্স ফ্রন্ট’:-
তথ্য বলছে, কাশ্মীরে প্রথমবার ‘দ্য রেজিসট্যান্স ফ্রন্ট’ শিরোনাম কাড়ে ২০২০ সালের ১ এপ্রিল। সেবার কুপওয়ারার কেরান সেক্টরে সেনার সঙ্গে ৪ দিন ধরে সংঘর্ষ চালায় টিআরএফ। এখানেই শেষ নয়। ২০২১ সালে জম্মুতে বায়ুসেনার স্টেশনে দুটো ড্রোন হামলার নেপথ্য নায়কও এই সংগঠন। এছাড়াও এদের কীর্তির লিস্টে রয়েছে সীমান্ত পার থেকে আসা অস্ত্র, বিস্ফোরক ইউএভি পথে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া। ভূস্বর্গের বুকে একাধিক হামলার সঙ্গে ধীরে ধীরে নাম জড়িয়েছে অই সংগঠনের। এরা সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান রকমের হুমকি দিতে থাকে। এমনকি প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদকেও এরা হুমকি দিয়েছে এককালে। তথ্য বলছে, স্থানীয় আইনজীবী, সরপঞ্চ হত্যা, শিক্ষক খুন, পুলিশ খুন, সিআইডি অফিসার খুন, ২০২৩ সালের অনন্তনাগ জঙ্গি হানা, রিয়াসি হামলার মতো নানান ঘটনা এই জঙ্গি সংগঠনের হাত ধরে এসেছে কাশ্মীরের মাটিতে।
কীভাবে কাশ্মীরের জমিতে এল?
তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে দিল্লি যখনই জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি সহ একাধিক পদক্ষেপ নেয়, তারপর সেই বছরের অক্টোবরেই জন্ম এই রেজিসট্যান্স ফ্রন্টের। এক কাউন্টার টেরিরিজম অফিসার বলছেন, উপত্যকায় ২০২০ সাল থেকে টিআরঅফের হামলাগুলির নেপথ্যে 'এক উচ্চহারে দক্ষ কিছু লস্কর জঙ্গি রয়েছে।' জানা যায় সংগঠনের নেৃতৃত্বে সাজিদ জাট, সজ্জাদ গুল,সলিম রেহমানিরা রয়েছে। আর এরা সকলেই লস্করের সঙ্গে জড়িত। এদিকে, ওই অফিসার বলছেন, ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি আর পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তানে বসে থাকা ভারত বিরোধী পরিকল্পনাকারীদের তরফে এই টিআরএফ জন্ম নেয়। তিনি বলছেন, এই ‘টিআরএফ আইএসআই আর পাকিস্তানি সেনার দ্বারা এসেছে ২০১৯ সালে, যাতে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স বা (FATF) এর' স্ক্যানার এড়ানো যায়।
হামলার প্যাটার্ন:-
ওই অফিসার বলছেন,' তথাকথিত টিআরএফের মাধ্যমে পাকিস্তান যে পদ্ধতি গ্রহণ করেছে তা হল স্থানীয় নাগরিক এবং কাশ্মীরে ভ্রমণকারীদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা।' তিনি বলছেন,'তারা আর নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময়ে লিপ্ত হয় না এবং হিট-এন্ড-রান ফায়ারিং বা গ্রেনেড হামলা চালায়।' উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, অনন্তনাগে গেরিলা রণকৌশল ব্যবহার করে নিরাপত্তা অফিসারদের ওপর টিআরএফ-র হামলার উদাহরণও রয়েছে। সেই হামলাকে তারা প্রতিশোধ বলে দাবি করেছিল। তাদের কমান্ডার রিয়াজ আহমেদের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে হওয়ার পর এই জঙ্গি সংগঠন হামলা ‘প্রতিশোধী’ চালায়।