উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল নার্সিং কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় ক্রমেই দানা বাঁধছে রহস্য। ওই ছাত্রী দেহ উদ্ধার হয়েছে হস্টেলের শৌচাগার থেকে। উদ্ধারের সময় ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল ছাত্রীর দেহ। মৃত ছাত্রীর নাম মিতালি বর্মন (২১)। ছাত্রীটি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বাসিন্দা। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদের কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ছাত্রী।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত অক্টোবর মাসে মিতালি ওই কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু, ভর্তি হওয়ার পরের মাস অর্থাৎ নভেম্বরে ছাত্রীর মা মারা যান তিনি। মিতালি মা এবং ঠাকুমার সঙ্গে বাড়িতে থাকতেন। তাঁর বাবা রতন বর্মন অবশ্য তাদের সঙ্গে থাকতেন না। তিনি আলাদা থাকতেন। সব মিলিয়ে মায়ের মৃত্যু ছাড়াও পারিবারিক কিছু সমস্যা ছিল ওই ছাত্রীর। পুলিশের অনুমান, মায়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি ছাত্রীটি। সেই কারণে হয়তো তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। যদিও ওই ছাত্রী অবসাদে ছিলেন কিনা তা আগে থেকে জানা যায়নি বলে হস্টেল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে স্নান করার জন্য শৌচালয়ে প্রবেশ করে মিতালি। দীর্ঘক্ষণ সময় কেটে যাওয়ার পরেও তিনি শৌচাগার থেকে বের না হওয়ায় ডাকাডাকি শুরু করেন হস্টেলের অন্যান্য আবাসিকরা। কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে অবশেষে শৌচাগারের দরজা ভাঙতেই দেখা যায় মিতালির ঝুলন্ত দেহ। শাওয়ারের পাইপে ওড়না জড়িয়ে আত্মহত্যা করেন ওই ছাত্রী। খবর দেওয়া হয় মেডিক্যাল কলেজের ফাঁড়িতে। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এদিকে, খবর দেওয়া হয় মেয়েটির বাবাকে। খবর পেয়ে তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আসেন। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। একটি যুবকের সঙ্গে তাদের রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়েছে। ওই যুবক বর্তমানে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। খবর পেয়ে তিনিও আসেন।
এদিকে, ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি কলেজে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘এটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এই ঘটনা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।’
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মা মারা যাওয়ার পর ছাত্রটি ১৭ দিন ধরে বাড়িতে ছিলেন। কলেজে ফিরে আসার পর থেকে তিনি অবসাদে ছিলেন। যে ছেলেটির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল তাঁর সঙ্গেও শুক্রবার রাতে শেষ কথা হয়েছিল মিতালির। বাবাও শুক্রবার রাতে মিতালির সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানান, ‘কথা বলে সেরকম অস্বাভাবিক কিছু পায়নি। কী কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটল তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।’
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক http://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup