হাওড়ার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবনের একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায় ছাত্রীদের নিয়ে মৌন মিছিল করার পর তাঁদের উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষিকা। আর সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরই নাকি তাঁকে শো কজ করা হয়েছে। এবার সেই বিষয়ে কী জানালেন তিনি?
আরও পড়ুন: 'ছেলেদের এবার শেখাতে হবে...' আরজি কর কাণ্ডে অবশেষে পথে নেমেই পুরুষদের জন্য বিশেষ বার্তা দেবের
মোনালিসা মাইতি এদিন আনন্দবাজারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ২০ অগস্ট তিনি ক্লাস নাইন থেকে শুরু করে ক্লাস ১২ পর্যন্ত ছাত্রীদের নিয়ে একটি মৌন মিছিল করেন। কিন্তু তার জন্য তাঁকে এখনও পর্যন্ত কোনও শো কজ নোটিশ পাঠানো হয়নি। তাঁর কথায়, 'অনেকে এমনটা আশঙ্কা করলেও আমার কোনও শো কজ চিঠি ধরানো হয়নি। যদি পাই আমি নিজের মতো করেই উত্তর দেব। এই ধরনের গণ আন্দোলন এভাবে শো কজ করে বা বদলি করে থামানো যাবে না।'
তিনি এদিন আরও জানান, 'ওরা এই মিছিল করার জন্য মরিয়া ছিল। আমি না বেরোলেও ওরা বেরোতই। আমি তো ওদের বড়দি। আমায় তো ওদের পাশে থাকতেই হবে।'
ভাইরাল ভিডিয়োতে কী বলতে শোনা যায় তাঁকে?
তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বক্তব্যের যে ভিডিয়ো এদিন ভাইরাল হয়েছে সেখানে তাঁকে বলতে দেখা যাচ্ছে, 'এটা আমার কাছে খুব আনন্দের যে তোমরা নিজেরা আমাকে চিঠি করেছ যে তোমরা এই প্রতিবাদে সামিল হতে চাও। আমরা সরকারি চাকরি করি যাঁরা অনেক সময় তাঁদের অনেক বাধ্যবাধকতা থাকে। ওই যে পুলিশরা আজকে এসেছে, আমরা গতকাল পর্যন্ত ৩ বার চিঠি করেছি। কিন্তু এটা ওদের দোষ নয়। আসলে ওই পোশাকটার কিছু নিয়ম আছে। কিন্তু আজকে ওরা যে এসেছে সেটার কারণ ওদের পোশাকের নিচে যে মনুষ্যত্ব আছে সেটার টানে। অফিসিয়ালি কোনও অনুমতি আমরা পাইনি। আর আমরাও ঠিক করেছিলাম যে যদি জেলে ঢুকতেই হয় তাহলে রাস্তায় নেমেই ঢুকব। ঘরে বসে থাকব না।'
আরও পড়ুন: 'আর আমি শাহরুখ!' ফ্রড কলে জেরবার! কেবিসি থেকে অমিতাভ ফোন করতেই ব্যক্তির উত্তর শুনে হেসে খুন নেটপাড়া
তিনি এদিন আরও বলেন, 'অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য সবসময় হিল্লিদিল্লি পৌঁছতে হবে এমনটা নয়। বাড়ি থেকেই তুমি তোমার প্রতিবাদ শুরু করো। তোমার কাজ তুমি করো।' তিনি এদিন নাইট ডিউটি না দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেন। একই সঙ্গে দুর্নীতির বিষয়েও ছাত্রীদের 'জ্ঞান' দেন। তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা এদিন আরও বলেন, 'নিজেদের অধিকারের জন্য অন্য যে কোনও নির্যাতিতার পাশে দাঁড়াবে। এটা বুঝে রাখো। যদি রাষ্ট্র ভেঙে পড়ে তাহলে ১৮ বছরের নিচের মানুষদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি একটা ১২ বছরের মেয়ের ধর্ষণ আটকাতে না পারি তাহলে একটা ১২ বছরের মেয়ের সিদ্ধান্তকে আমাদের মর্যাদা দিতে হবে। নিজেদের কখনও ঠকাবে না। অন্য কোনও মেয়ের প্রতি অন্যায় হয় তাঁর পাশে দাঁড়াবে।'