জোড়া খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত ১০ জনকেই জোড়া যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি দিল আদালত। সেইৃসঙ্গে, এক প্রাক্তন বিধায়ক-সহ চারজনকেও ৫ বছরের সশ্রম কারাবাসের সাজা দেওয়া হল। শুক্রবার কেরালার এর্নাকুলামের একটি সিবিআই কোর্ট এই রায় দিয়েছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই ঘটনায় যাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তারা সকলেই সিপিআই(এম)-এর নেতা ও কর্মী!
এই বিষয়ে বার অ্যান্ড বেঞ্চ, ইন্ডিয়া টুডে-সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যে সমস্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, সেই অনুসারে - ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে।
রাজনৈতিক সংঘর্ষের বলি হতে হয় যুব কংগ্রেসের দুই সদস্যকে। প্রাণ যায় ২৪ বছরের শরৎ লাল পিকে এবং ১৯ বছরের কৃপেশের। ঘটনাটি ঘটে কেরালার কাসারাগোড এলাকায়।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় ১০ সিপিআই(এম) সদস্যকে জোড়া যাবজ্জীবনের সাজা শোনানোর পাশাপাশি আরও চারজনকে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে প্রাক্তন সিপিআই(এম) বিধায়ক কেভি কুনহিরামনেরও। এই চারজনের বিরুদ্ধে অপরাধে মদত দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
২০১৯ সালের সেই প্রাণঘাতী ঘটনা সম্পর্কে জানা গিয়েছে, সেই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন সিপিআই(এম) ও কংগ্রেসের কর্মীরা। নিহত দুই তরুণ সেই সময় বাইকে করে যাচ্ছিলেন। তখনই তাঁদের পথ আটকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাঁদের কুপিয়ে খুন করে সিপিআই(এম) সদস্যরা।
পরবর্তীতে এই ঘটনার তদন্তভার যায় সিবিআই-এর হাতে। শুনানির পর ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে ১০ জনের বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং তাদের দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।
তাদের সকলের বিরুদ্ধেই খুন, ষড়যন্ত্র, বেআইনি জমায়েত-সহ একাধিক ধারায় দায়ের করা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দোষীদের মধ্যে টি রঞ্জিত এবং এ সুরেন্দ্রণ নামে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ নষ্টের অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। তারা সমস্ত দোষীকেই বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল। এর জন্য জোড়া যাবজ্জীবনের পাশাপাশি এই দু'জনকেই অতিরিক্ত ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।
প্রাক্তন বিধায়ক-সহ যে চারজনকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তাদের প্রত্যকেকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এই চারজন জোর করে পুলিশের হেফাজত থেকে দোষীদের ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। সেই কারণেই তাদের জেল ও জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের ও মামলা রুজু করা হলেও তথ্যপ্রমাণের অভাবে তাঁদের বেকসুর খালাস করে দিয়েছে আদালত।