মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জাতির উদ্দেশে নিজের শেষ ভাষণে 'আমেরিকান অলিগার্কদের' নিয়ে সতর্কবার্তা দিলেন জো বাইডেন। তাঁর অভিযোগ, দেশের গুটিকয়েক ধনী ব্যক্তির হাতে বিপজ্জনক ভাবে কেন্দ্রভূত হচ্ছে ক্ষমতা। আমেরিকায় অতি-ধনীদের একটি 'অভিজাততন্ত্র' (অলিগার্কি) এবং 'প্রযুক্তি-শিল্প কমপ্লেক্স' সম্পর্কে মার্কিনিদের সতর্ক করলেন বাইডেন। ওভাল অফিস থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আজ আমেরিকায় সম্পদ, ক্ষমতা ও প্রভাবের একটি চরম অভিজাততন্ত্র আকার ধারণ করছে, যা আক্ষরিক অর্থেই আমাদের পুরো গণতন্ত্র, আমাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।' অল্প কিছু মানুষের মধ্যে ক্ষমতা ও সম্পদ পুঞ্জীভূত হওয়ার বিষয়ে নিজের উদ্বেগ তুলে ধরেন বাইডেন। (আরও পড়ুন: টানা ৯৬ ঘণ্টার আলোচনা, ট্রাম্পকে কৃতিত্ব বাইডেনের, গাজায় কবে থেকে যুদ্ধবিরতি?)
আরও পড়ুন: সাংবিধানিক সংস্কারে বাংলাদেশের নাম বদলের সুপারিশ, কী হতে পারে নয়া নাম?
আরও পড়ুন: আদানি, SEBI প্রধানকে নিয়ে বিস্ফোরক সব দাবি করা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ বন্ধ হচ্ছে
বাইডেন নিজের ভাষণে আরও বলেন, 'আমি একটি প্রযুক্তি-শিল্প কমপ্লেক্সের সম্ভাব্য উত্থান নিয়েও সমানভাবে উদ্বিগ্ন। এটা আমাদের দেশের জন্যও সত্যিকারের বিপদ ডেকে আনতে পারে।' উল্লেখ্য, নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভের পর বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ও প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ ব্যক্তিরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। স্পেসএক্স এবং টেসলার প্রতিষ্ঠাতা তথা বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি ইলন মাস্ক প্রকাশ্যে ট্রাম্পের হয়ে প্রচার করেছেন। এমনকী ট্রাম্পকে সহায়তা করতে ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছেন। মেটার মার্ক জুকারবার্গ এবং অ্যামাজনের জেফ বেজোসের মতো বিলিয়নিয়াররা ট্রাম্পের শপথগ্রহণ তহবিলে অনুদান দিয়েছেন। (আরও পড়ুন: মন্দিরে ছোট্ট ছেলের সামনে বাবা অমিত শাহের 'বকুনি' শুনলেন জয়! ভাইরাল ভিডিয়ো)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সংবিধান থেকে 'ধর্মনিরপেক্ষ' বাদ দেওয়ার সুপারিশ কমিশনের
এদিকে নির্বাচনে জিতে ধনকুবের ইলন মাস্ক এবং ব্যবসায়ী বিবেক রামাস্বীমাকে সরকারি পদে নিয়োগের ঘোষণা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের দুই কট্টর সমর্থক 'ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি'র প্রধান হবেন। একদা ডেমোক্র্যাট ইলন মাস্ক এই নির্বাচনে রিপাবলিকানদের হয়েই প্রচার করেছেন। এমনকী ট্রাম্পের জন্যে জলের মতো টাকাও ঢেলেছেন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের প্রশাসনে মাস্ক গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ায় সেই অর্থে অবাকক হননি কেই। এদিকে নির্বাচনের পর থেকেই 'সুর' বদলেছেন জুকারবার্গ। একদা তাঁর সংস্থা ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম থেকে 'নিষিদ্ধ' হয়েছিলেন ট্রাম্প। এহেন জুরকারবার্গ জো রোগানের পডকাস্টে এসে দাবি করেন, বাইডেন সরকার তাদের ওপর চাপ দিয়ে কনটেন্ট সরাতে বাধ্য করত। এরই সঙ্গে আমেরিকায় ফেসবুকে তৃতীয়পক্ষেপ ফ্যাক্টচেকিং বন্ধের ঘোষণাও করে মেটা। এই আবহে বাইডেন আজ তাঁর ভাষণে উল্লেখযোগ্যভাবে বলেন, 'আমেরিকার নাগরিকদের ভুল এবং মিথ্যা তথ্য দেওয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি হবে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হবে।'