আগামিকাল দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উদ্দেশ্যে সেজে উঠেছে দিঘা। এই উদ্বোধনের সাক্ষী থাকতে কয়েকদিন আগেই দুর্গাপুর থেকে সাইকেলে করে দিঘার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দা স্বপন কুমার ঘোষ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে ৩৪ বছরের পুরনো সাইকেলকে সঙ্গী করে দিঘায় উদ্দেশে পাড়ি দেন তিনি। তবে দিঘায় পৌঁছানোর আগে হেনস্থার শিকার হলেন স্বপন কুমার ঘোষ। অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বিজেপি কর্মীরা তাঁকে হেনস্থা করেন। পহেলগাঁওয়ের ঘটনা উল্লেখ করে তাঁর ধর্মীয় পরিচয় জানতে চাওয়ার পাশাপাশি বিজেপি কর্মীরা তাঁর সাইকেলে পতাকা টেনে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ‘দিঘা বাঙালির হানিমুন স্পষ্টও, জগন্নাথ মন্দির উপরি পাওনা’, বার্তা জুনের
স্বপন ঘোষ বলেন, ‘বেলদা রোড থেকে যখন আমি এগরা রোডে উঠি তখন রাতে খাবার এবং থাকার জন্য রাস্তার পাশে একটি ধাবায় যাই। তখন সেখানে থাকা বিজেপির কিছু কর্মী আমার নাম পরিচয় জানতে চাওয়ার পাশাপাশি আমাকে হেনস্থা করে। আমার সাইকেল থেকে পতাকা খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমাকে ধাক্কাধাক্কি করে।’ স্বপন বাবু তাঁদের জানান, তিনি কোনও ঝামেলায় জড়াতে আসেননি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রচারের উদ্দেশ্যে দিঘা যাচ্ছেন। এরপরই তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
তাঁর আরও অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা তাঁকে হুমকি দেন যে, তিনি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এলাকায় ঢুকে পড়েছেন। তাই তাঁকে সামনে আরও বিপদের মুখে পড়তে হবে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিজেপি সমর্থকরা তাঁর ‘জয় জগন্নাথ’ ধ্বনিতে আপত্তি জানান এবং তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলার জন্য জোর করেন। কথোপকথনের সময়, তাঁরা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ তোলেন এবং তাঁর ধর্মীয় পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, দূর্গাপুর থেকে দিঘার দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার। এই দীর্ঘ পথে এই মন্দির তৈরির জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে যেমন প্রচার করেন তেমনি সম্প্রীতির বার্তা দেন। দুর্গাপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ঘটা করে স্বপনবাবুর যাত্রার সূচনা করেছিলেন। জানা গিয়েছে, স্বপনবাবু পেশায় রংমিস্ত্রি। তাঁর আদি বাড়ি নদিয়ার করিমপুরে। তবে বর্তমানে তিনি দুর্গাপুরে থাকেন।