তাঁর নাম স্বামী হিতেশ্বরানন্দ সরস্বতী। রাজস্থানের এই সন্ন্যাসীকে প্রয়াগরাজে এবারের মহাকুম্ভ মেলায় মহামণ্ডলেশ্বর উপাধিতে ভূষিত করা হল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সনাতন ধর্মে মহামণ্ডলেশ্বর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উপাধি। যা শঙ্করাচার্যের পরের স্থানে থাকা ধর্মীয় গুরুকে বোঝায়।
এবারের মহাকুম্ভ মেলা চলাকালীন মাঘ মাসের কৃষ্ণ পক্ষের দ্বাদশী তিথিতে স্বামী হিতেশ্বরানন্দ সরস্বতীকে মহামণ্ডলেশ্বর উপাধি দেওয়া হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, মাঘ মাসের কৃষ্ণ পক্ষের দ্বাদশী তিথি একটি অত্যন্ত শুভ ও পবিত্র সময়। সেই কারণেই এই তিথিকে বেছে নেওয়া হয়েছিল।
সূত্রের দাবি, স্বামী হিতেশ্বরানন্দ সরস্বতীর সঙ্গে সরাসরি সালাম্ভার এবং সারেপুরের যোগ রয়েছে। এদিকে, তিনি মহামণ্ডলেশ্বরের লাভ করতেই রাজস্থানের মেওয়াড় অঞ্চলের কার্যত উৎসব শুরু হয়ে যায়। তাঁর সাফল্যে আনন্দে, উচ্ছ্বাসে উদ্বেল হয়ে পড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। তিনি নিজেদের গর্বিত দাবি করেন।
জানা গিয়েছে, শ্রী পঞ্চায়েতি আখারা মহানির্বাণী আখারা তাঁকে এই উপাধি প্রদান করেছে, যা এই এলাকার মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু, প্রশ্ন হল - এক সন্ন্যাসীর উপাধি লাভ করা নিয়ে কেন কোনও একটি এলাকার সাধারণ মানুষ এত উচ্ছ্বসিত। এর নেপথ্যে যথাযথ কারণ রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। কী সেই কারণ?
স্বামী হিতেশ্বরানন্দ সরস্বতীর জন্ম হয়েছিল পালির সুমেরপুরের কাছে চান্দোর নামে একটি এলাকায়। তিনি স্থানীয় একটি শ্রীমালি ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। তাঁর মায়ের নাম হুলাসি দেবী। তিনি কেলওয়ারার কুম্ভলগড়ের মেয়ে ছিলেন।
সন্ন্য়াস নেওয়ার আগে পর্যন্ত যথেষ্ট বিলাসবহুলভাবেই জীবন কাটিয়েছিলেন এখনকার স্বামী হিতেশ্বরানন্দ সরস্বতী। পরবর্তীতে সংসার ত্যাগ করে কাতাবলা মঠের পীঠাধীশ্বর হন স্বামী হিতেশ্বরানন্দ সরস্বতী। এই মঠের বয়স প্রায় ৫৫০ বছর।
মহামণ্ডলেশ্বর হওয়ার পর স্বামী হিতেশ্বরানন্দ সরস্বতীকে বেশ কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে। মেনে চলতে হবে অনেক নিয়ম-কানুন। যেমন -
তাঁর পূর্বেকার পরিবারের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখা যাবে না। এই নিয়ম মানার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বিচ্যুতি হলেই তাঁকে আখারা থেকে বহিষ্কার করা হবে।
কোনও ধরনের চারিত্রিক দুর্বলতা থাকা চলবে না।
অপরাধ জগতের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, এমন কোনও ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক রাখা যাবে না।
কোনওভাবে আরামদায়ক বা বিলাসবহুল জীবনযাপন করা যাবে না।
মাংস ভক্ষণ বা মদ্যপান করা যাবে না। আজীবন তাঁকে এই সমস্ত নিয়ম ও নীতি মেনে চলতে হবে।