রাতে অন্ধকারে আক্রমণ করে বসল চিতাবাঘ। আর তার জেরে তুমুল আতঙ্ক তৈরি হয়েছে মালবাজার এলাকায়। মালবাজার মহকুমার নাগরাকাটার কলাবাড়ি চা–বাগানে চিতাবাঘের এই আকস্মিক আক্রমণে মোট তিনজন মারাত্মক জখম হন। দুটি পৃথক ঘটনা ঘটে চা–বাগানের আট নম্বর সেকশনের রাস্তায়। এই ঘটনা রাতে ঘটে যাওয়ায় তখন সেভাবে প্রকাশ্যে আসেনি। আজ, বুধবার পর পর দুটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এবার থেকে রাতে বের হলে লাঠি–সহ নানা জিনিস নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথম ঘটনা, চলন্ত মোটরবাইকে থাকা জামাই রাম রহমান আলি (৩৪) এবং তার শাশুড়ি রহিমা খাতুন (৫০) বাড়ি ফিরছিলেন। তখন তাঁদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘটি। তাঁরা হকচকিয়ে যান। এমনকী আহতও হন। দ্বিতীয় ঘটনা, চা–বাগানের চৌকিদার রঞ্জিত ওড়াও যখন সাইকেলে করে ফিরছিলেন বাড়ি তখন তাঁর ওপর হামলা চালায় চিতাবাঘটি। ওই সময় তিনি ও তাঁর বন্ধু সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। এই দুটি ঘটনা এখন সাড়া ফেলে দিয়েছে মালবাজারে। এলাকার মোড়ে এবং চায়ের দোকানে এখন এই আতঙ্কের আলোচনা।
আরও পড়ুন: আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় নয়া মোড়, সিবিআইয়ের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট
এই ঘটনার পর সকলেই নানা চিন্তা করতে শুরু করেছেন। বিষয়টি বন দফতরকে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে চৈতন ওড়াও বলেন, ‘আমার জামাই যখন সাইকেলে চেপে যাচ্ছিল তখন চিতাবাঘ মোটরবাইকের পিছন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন ওর কাছে যে লাঠি ছিল সেটা ছুঁড়ে মেরেছে।’ আক্রান্ত রহমান আলির বক্তব্য, ‘আমি যখন মোটরবাইকে করে যাচ্ছিলাম, তখন চিতাবাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে মোটরবাইকের ওপর। আমার মোটরবাইকের পিছনে বসেছিল আমার মা। মা মোটরবাইক থেকে পড়ে যায়। আমরা খোলাবাড়ি থেকে আসছিলাম। চিতাবাঘটা চা–বাগানের মধ্যে ছিল। রাস্তার একদম পাশেই বাগান। এমনভাবে হামলা করে যে আমার মা চলন্ত মোটরবাইক থেকেই পড়ে যায়।’
এই ঘটনা নিয়ে পরিবারের সদস্যরাও বেশ আতঙ্কিত। আহত রহমান আলির স্ত্রীর কথায়, ‘আমার স্বামীর সঙ্গে মা মোটরবাইকে গিয়েছিল। কলাবাগান দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। তখনই বাঘ লাফিয়ে এসে আমার স্বামী আর মায়ের ওপর হামলা করে। আমার স্বামীর বুকে খুব আঘাত লেগেছে। আমার মায়ের পেটে লেগেছে।’ রহমান আলি ও রহিমা খাতুনের বাড়ি নাগরাকাটার ঘেরকাটা গ্রামে। রঞ্জিত ওড়াও কলাবাড়ির বাঁধ লাইন এলাকার বাসিন্দা। আহতদের নাগরাকাটার শুলকাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দু’জনকে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনার পরই ডায়না রেঞ্জের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান।