বড়বাজারের মেছুয়ায় যে আগুন লেগেছিল এবং তার জেরে ১৪ জন মারা গিয়েছে সেই ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার সেখানে যান মুখ্যমন্ত্রী পরিদর্শন করতে। সেখানে পরিদর্শন করে তদন্ত করার জন্য কমিটি করার কথা বলে সেখান থেকে যান পার্ক স্ট্রিটের ম্যাগমা হাউসে। সেখানে মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা এবং প্রশাসনিক অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। আর ম্যাগমা হাউসের সামনে একের পর এক সাজানো গ্যাস সিলিন্ডার দেখে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
বড়বাজারের ওই হোটেল ছিল বেসরকারি। তার উপর অগ্নিকাণ্ডে প্রায় দেড় দিন ধরে তোলপাড় হয়েছিল এলাকা। বিরোধীরা এখানে এসে জোর সমালোচনা করতে শুরু করেন। বিরোধী দলনেতা এসে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন। তারপর একই পরিস্থিতি দেখতে পান মুখ্যমন্ত্রী পার্ক স্ট্রিটে। সেখানে এক রেস্তোঁরার সামনে অবস্থা দেখে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ নির্দেশ, ‘রেস্তোরাঁর ছাদ বন্ধ করা যাবে না।’ বৃহস্পতিবার ম্যাগমা হাউসের সামনে এসে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আগুন লাগলে দমকল কী করবে? ধোঁয়া সামাল দেওয়াই তো মুশকিলের। এত সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হলে তো ৫০ হাজার লোক মারা যাবে। আমি মেয়র, কলকাতা পুলিশ কমিশনার, দমকলকে বলেছি এখানে বসে ওদের ডাকবে। জরুরি মিটিং করবে। আমি যেটা বলেছি সেটাই হবে। রেস্তোরাঁর ছাদ বন্ধ করা হবে না।’
আরও পড়ুন: হেঁসেলে শুঁড় ঢুকিয়ে প্রেসার কুকার নিল গজরাজ, সেবক পাহাড় লাগোয়া জঙ্গলে চম্পট
শহরে ইদানিং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা দেখা যায় তপসিয়া, তিলজলা এলাকায়। তবে বড়বাজারে আগেও আগুন লেগেছে। এবার মেছুয়ার হোটেলে আগুন লাগে। তখন মুখ্যমন্ত্রী দিঘায় ছিলেন। এবার বড়বাজারের পর পার্ক স্ট্রিটে এসে দেখেন। কেন ম্যাগমা হাউসে এলেন মুখ্যমন্ত্রী? জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি কোনও একজনের থেকে শুনেছিলাম। সে কদিন আগে এসেছিল। বলেছিল অবিলম্বে ব্যবস্থা করো। একটা ছোট সিঁড়ি। আগুন লাগলে কেউ নামতে পারবে না। লিফটে করে লোকে যাতায়াত করে। লোক তো জানে না। আগুন লাগলে কেউ ওঠানামা করলে বিপদ ঘটে।’
এছাড়া দিঘা থেকে আগুনের প্রত্যেক মুহূর্তের খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জগন্নাথধামের উদ্বোধনের পর শহরে ফিরেই আজ, বৃহস্পতিবার সেখানে যান। নিজেদের প্রাণের কথা ভেবে বিপজ্জনক বাড়ি থেকে অন্যত্র সরে যাওয়ার আর্জি জানান সেখানকার বাসিন্দা এবং আবাসিকদের। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কেউ সেকথা কান না দিলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই হুঁশিয়ারি দেন তিনি। কমিটি গড়ে দেন। আর তদন্ত চলবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেই রিপোর্ট তাঁকে দিতে হবে বলেও জানিয়েছেন।