উৎসব চলাকালীন অন্ধ্রপ্রদেশের মন্দিরে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা! আচমকায় ভক্তদের ওপর ভেঙে পড়ল নবনির্মিত মন্দিরের দেওয়ালের একাংশ। তাতে চাপা পড়ে কমপক্ষে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ভোরে বিশাখাপত্তনমের সিমহাচলমে শ্রী বরাহ লক্ষ্মী নরসিংহ স্বামী মন্দিরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়াও চারজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।নিহতদের মধ্যে তিন জন রয়েছেন মহিলা। তাঁদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাজ্যের মন্ত্রী ভাঙ্গালপুদি অনিথা।
আরও পড়ুন: শ্মশানের পাঁচিল ভেঙে পড়ল হুড়মুড়িয়ে, চাপা পড়ে মৃত্যু হল শিশুসহ ৪ জনের, আহত ২
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাত আড়াইটে নাগাদ। বার্ষিক চন্দনোৎসব উৎসব উপলক্ষে ভক্তরা দেবতার ‘নিজরূপা’ দর্শনের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময় মন্দিরের দেওয়ালের একাংশ ভেঙে পড়ে। খবর পেয়ে ভোরেই মন্দিরে যান মন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নবনির্মিত মন্দিরের দেওয়ালটি জলে ভিজে গিয়েছিল। তারওপর ভক্তদের চাপে দেওয়ালটি ভেঙে পড়ে। ঘটনার পরেই সেখানে উদ্ধার কাজ শুরু করে উদ্ধারকারী দল। বিশাখাপত্তনমের জেলা শাসক হরেন্ধীর প্রসাদ এবং পুলিশ কমিশনার শঙ্খ ব্রত বাগচীও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁরা উদ্ধারকাজ তদারকি করেন।
জানা গিয়েছে, টিকিটের বিনিময়ে মন্দিরে এই বিশেষ দর্শনের সুযোগ পাচ্ছিলেন ভক্তরা। ৩০০ টাকা দিয়ে তাঁরা দেবতার দর্শনের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মন্দিরটি অবস্থিত সিমহাগিরি বাস স্ট্যান্ডের কাছে একটি শপিং কমপ্লেক্সের পাশে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মাটি আলগা হয়ে যাওয়ার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার পর দ্রুত হতাহতদের উদ্ধার করে বিশাখাপত্তনমের কিং জর্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, চন্দনোৎসবম উৎসব হল সিমহাচলম মন্দিরের একটি বার্ষিক উৎসব।সাধারণত সারা বছর ধরে প্রতিমাটি ঢেকে রাখা চন্দনের প্রলেপ দিয়ে। বছরে একবার চন্দনের প্রলেপ সরিয়ে ভগবান নৃসিংহ স্বামীকে ভক্তদের কাছে তাঁর আসল রূপ দেখানো হয়। এই বিশেষ মুহূর্ত হাজার হাজার ভক্তের কাছে অত্যন্ত শুভ এবং মঙ্গল বলে বিবেচিত হয়। মঙ্গলবার রাত ১ টায় ‘সুপ্রভাত সেবা’র মাধ্যমে ভগবানকে জাগ্রত করা হয়েছিল। বিশেষ রূপার যন্ত্রের সাহায্যে চন্দনের প্রলেপ সরিয়ে দেওয়ার পর তাঁর আসল রূপ সামনে আনা হয়। এরপর অভিষেক এবং অন্যান্য বৈদিক আচার-অনুষ্ঠান যথাযথভাবে সম্পন্ন করা হয়। এই বিরল দৃশ্য দেখার জন্য হাজার হাজার ভক্ত ইতিমধ্যেই সিমহাচলমে জড়ো হয়েছিলেন। বৈদিক রীতি মেনে মন্দিরের বংশগত ট্রাস্টি পুষ্পপতি অশোক গজপতি রাজু এবং তাঁর পরিবারকে দেবতার প্রথম দর্শন দেওয়া হয়। পরে রাজস্ব মন্ত্রী অনাগনি সত্য প্রসাদ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দেবতাকে ঐতিহ্যবাহী রেশমের পোশাক প্রদান করেন।