সুন্দরী কাশ্মীরকে দুচোখ ভরে দেখতে গিয়েছিল বাংলার একাধিক পরিবার। ভেবেছিলেন বেড়ানোটা সুখের হবে। কিন্তু সেটা হল না। কার্যত প্রাণ হাতে করে বাড়ি ফিরেছে বাংলার একাধিক পরিবার। কেমন অভিজ্ঞতা তাঁদের?
হাওড়ার বাঁকরা এলাকার বাসিন্দা নুরজ মোল্লা ও তাদের পরিবারও গিয়েছিলেন কাশ্মীরে। ফিরে এসেছেন তাঁরা। নুরজ মোল্লা বলেন, আমরা ২২ তারিখে ঢুকেছিলাম। সেখানে মিনি সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার কথা ছিল। আমরা বেরিয়ে পড়েছিলাম। আমরা প্রায় ১ কিমি দূরে ছিলাম। সেই সময় ড্রাইভার আমাদের বলল ওখানে যাবেন না। ওখানে কিছু হয়ে গিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করছিলাম না। এরপর আমাদের হাত ধরে আমাদের বললেন ওখানে যাবেন না। হামলার ঘটনা হয়েছে। পাশের দোকানদারগুলো সাটার বন্ধ করে দিচ্ছিল। পুরো লক ডাউনের মতো পরিস্থিতি। ঘোড়াওলারাও ছোটাছুটি করছিলেন। আমাদের হোটেল কাছেই ছিল। সেখানে আমাদের ঢুকিয়ে দিল। আমাদের লাঞ্চও হয়নি। ওরা বলল এখন দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে যা ছিল সেগুলি দিয়েই আমাদের লাঞ্চ করালো ওরা। ভূমিকম্প যখন হয় সেই কেন্দ্রে যারা থাকে তাদের যেমন অবস্থা হয় তেমন অবস্থা হল আমার। এমপি, এমএলএও ফোন করে খবর নিয়েছিলেন। আমাদের তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়ার জন্য় বলেছিল। আমরা চেষ্টা করছিলাম যত তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়তে। আমরা জানালা খুলতেই দেখলাম নীচে সেনা। হেলিকপ্টার উড়ছে আকাশে। জঙ্গিদের কড়া শাস্তি দাবি করছি। এই ঘটনা ভারতবাসী হিসাবে মানতে পারছি না। আমরা এখন পার্টির কথাও ভাবছি না, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের শাস্তি দেওয়া হোক।
নদিয়ার শান্তিপুর থেকে গিয়েছিলেন একাধিক পরিবার। তাঁদেরও ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে। বৃন্দাবন কুন্ডু নামে এক যুবক বলেন, আমাদের বাবা মা শ্বশুর শাশুড়ি গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে মোবাইলে জানতে পারলাম। ফোন করলাম। সন্ধ্যায় বাবা ওখান থেকে সিম কিনে ফোন করেছিল। শ্রীনগরে ধসের জন্য় আটকে পড়েছিল। পরে জঙ্গি হামলার খবর পেয়ে ফিরে আসে। ধস না নামলে বিরাট ঘটনা ঘটে যেত। ধসটাই বাঁচিয়ে দিল। পহেলগাঁওতে যাওয়ার কথা ছিল বাবা মায়ের। কিন্তু সেখানে ধসের কারণেই যেতে পারেনি। তবে ভবিষ্যতে আমি সহজে আর ওদের কাশ্মীরে পাঠাতে চাইব না।
একেবারে হাড়হিম করা অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে একাধিক পরিবার। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন তাঁরা। তবে সেই সময় কাশ্মিরীরা যেভাবে সহায়তা করেছে তা ভোলার নয়।