সম্প্রতি রাজ্যের বেশ কয়েক জায়গায় আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ। আর এবার ঘটনাস্থল বীরভূমের সিউড়ি। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে দুই যুবক গ্রামে প্রবেশ করে। স্থানীয়রা তাদের হাতেনাতে ধরে গণপিটুনি দিতে শুরু করে। তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশ আক্রান্ত হয়। এমনকী স্থানীয় থানার ওসির কলার চেপে ধরা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে সিউড়ির মল্লিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে মিনিস্ট্রিল গ্রামে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হতেই বীরভূমের জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা দাবি কাজল শেখ দাবি করেছেন, ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই।
আরও পড়ুন: বাবা মাকে অত্যাচার, বাঁচাতে গিয়ে পুলিশকে দা-এর কোপ ছেলের, প্রাণ বাঁচাল মোবাইল
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই যুবক বন্দুক নিয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে। এরপর তারা গ্রামবাসীদের হুমকি দেয়। এমনকী গুলিও চালায়। তবে গুলি কারও লাগেনি। তাদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে বেআইনিভাবে জমি দখল নিয়ে কড়া পদক্ষেপের কথা বলেছেন সেখানে এই যুবকদের দল জোর করে জমি দখলের মদত দিচ্ছে। গ্রামবাসীদের ভয় দেখাচ্ছে। এভাবে হুমকিতে তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না বলেও অভিযোগ। তবে শেষমেষ মঙ্গলবার ২ যুবককে তারা করে ধরে পেলেন। এরপর গ্রামবাসীরা তাদের কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন। পরে তাদের হাত-পা বেঁধে রাখেন গ্রামবাসীরা।
ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পৌঁছয়। তবে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। তাতে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। শুধু তাই নয়, লাঠি হাতে নিয়ে গ্রামবাসীরা পুলিশকে তাড়া করে। সেই সময় পুলিশ গ্রামবাসীদের হাতে আক্রান্ত হয় বলে অভিযোগ। তবে প্রথম দিকে পুলিশ পিছু হঠতে বাধ্য হলেও খবর পেয়ে আরও বিশাল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ তখন মারমুখী হলে গ্রামবাসীরা পালাতে শুরু করে। এরপর দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গিয়েছে এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের সঙ্গে থাকা অস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এখন তারা কোথা থেকে অস্ত্র পেল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি, এটি হল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তবে তা অস্বীকার করেছেন কাজল শেখ। তাঁর দাবি, এর সঙ্গে কোনও রাজনীতির যোগ নেই। এটি পারিবারিক ঝামেলা। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল অনেক বড় পরিবার। ফলে বড় পরিবারে ঝামেলা থাকতেই পারে। তবে এদিনের ঘটনায় তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বা কোনও রাজনীতির যোগ নেই। পুলিশকে দলগতভাবে রাজনীতির রং না দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’