আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা, ৫ মে থেকে স্টার জলসার পর্দায় আসতে চলছে 'বুলেট সরোজিনী'। মেগার শুরু আগেই নির্মাতারা ধারাবাহিকের সব চরিত্রদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন। তাঁদের লুকেও রয়েছে বেশ বড় চমক। সেখানেই হাজির হয়েছিল হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা।
মেগায় 'সরোজিনী'-এর ভূমিকায় দেখা যাবে দিয়া বসুকে। 'সরোজিনী' সাংবাদিক হতে চায়। সে প্রেমে পড়ে তার কলেজের অধ্যাপক ‘অর্ণব’-এর। অধ্যাপক অর্ণবের চরিত্রে দেখা যাচ্ছে অভিনেতা অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে 'সরোজিনী' জীবনে কেবল একটা লক্ষ্য নয়, ছোটবেলায় চোখের সামনে বাবা-মাকে খুন হতে দেখে সে, বাবা-মায়ের খুনীকে খুঁজে পাওয়ার আশায় বাধ্য হয় প্রেমের থেকে মুখ ফিরিয়ে, অভিষেক বীর শর্মা থুড়ি 'রণদীপ চট্টপাধ্যায়'কে বিয়ে করতে।
তবে পর্দায় 'সরোজিনী-অর্ণব-রণদীপ'-এর ত্রিকোণ প্রেমের সমীকরণ যতটাই জটিল হোক না কেন, বাস্তবে দিয়া, অর্ণব ও অভিষেক ইতিমধ্যেই খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছেন। দুই নায়ককে পাশে নিয়ে দিয়া বলেন, 'আমাকে সারাক্ষণ এঁরা লেগপুল করে যাচ্ছে।' তারপর অভিষেক জানান, তিনি আর দিয়া এখনও স্ক্রিন শেয়ার করেননি। অভিষেকের কথায় 'ওই দৃশ্যটা করার জন্য আমি খুবই উৎসাহী।' পাশ থেকে দিয়া বলে ওঠেন, 'এখনই সবটা দিও না।' তবে অর্ণবের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি দৃশ্যের শ্যুটিং সেরে ফেলেছেন নায়িকা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা খুব মজা করে দৃশ্যগুলো করেছি।’ আর দিয়া কথা শেষ করার আগেই পাশ থেকে অর্ণব বলে ওঠেন, 'প্রফেসর-ছাত্রী, সকলেই বেশ ভালো লাগবে।'
তবে এখানেই তাঁদের গল্প থামে না। দিয়া জানান, পর্দার 'রণদীপ' অভিষেক নাকি কড়া ডায়েটে থাকেন। নায়িকার কথায়, 'আমি তো সব খাই। আমি একদিন ইন্সট্যান্ট নুডুলস খাচ্ছিলাম। তখন হঠাৎ অভিষেক বলল সন্ধ্যেবেলা নুডুলস খাচ্ছো। তখনই বুঝলাম বেশ কড়া ভাবে ডায়েট করে অভিষেক।'
কিন্তু নায়িকারা নিজেরাই তো কড়া ডায়েটে মেনে চলেন, এই কথা উঠতেই দিয়া নয় বরং অর্ণব বললেন, 'ওঁকে দেখে মনে হয় খুব কড়া ডায়েট করে। কিন্তু ওঁর উপর ভগবানের অনেক আশীর্বাদ আছে যে, ওঁকে এইসব করতে হয় না, কিছু সেরকম না করেই এরকমই থাকে।' তখন দিয়া নিজেকে আর অর্ণবকে দেখিয়ে বলেন, 'আমরা আসলে খেতে খুব ভালোবাসি।' শ্যুটিংয়ের মাঝে অনেকটা ফাঁকা সময় থাকলে বোর হয়েও নাকি খাবার খান তাঁরা। তারপর তাঁদের খাবার বেশ বড় একটা লিস্টও দেন। নায়ক-নায়িকা ইতিমধ্যেই একসঙ্গে কোল্ড কফি, রোল ইত্যাদি খেয়ে ফেলেছেন।
তাঁদের দিক থেকে ক্যামেরা ঘুরতেই দেখা মেলে শ্রীময়ী চট্টরাজের। এই মেগায় তিনি খলনায়িকা। তবে এই একটা শব্দে তাঁর চরিত্রের বর্ণনা দিতে নারাজ শ্রীময়ী। অভিনেত্রীর কথায়, ‘আমি কি আদৌও ভিলেন? আমি নিজেই জানি না। হয়তো লুক দেখে সবাই বলছে। আসলে সবাই এখন ভীষণ জাজমেন্টাল। আমরা লোকজনকে দেখে খুব তাড়াতাড়ি তাঁর একটা ছবি বানিয়ে নিই। সে আসলে কেমন, তা জানার চেষ্টা করি না। যেমন আমারই ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনেক বেশি চর্চা হয়েছে, কাজের থেকেও। অনেকে আমাকে যেমনটা ভাবেন, আমি কি সত্যি তাই? তা তো নয়। সে রকম রাগিনী চট্টোপাধ্যায়েরও অনেকগুলো দিক রয়েছে। সেই দিকগুলো জানতে হলে দেখতে হবে বুলেট সরোজিনী।’
এরপরই দেখা মেলে এই মেগার আর এক মুখ 'টিনা'র। আর তাঁকে দেখে অবাক না হয়ে পারা যায় না। 'নিম ফুলের মধু'-এর সেই শান্ত ‘তরিতা দত্ত’ কোথায়? এই লুকের তাঁকে তো চেনাই দায়। শুনেই একরাশ হেসে তনুশ্রী গোস্বামী বলেন, 'এই লুকটা দেখে সত্যি সকলে অবাক হচ্ছেন, কারণ ওখানে একেবারে নো মেকআপ লুক ছিল। ভীষণ শান্ত, সুশীলা স্নেহময়ী একজন মহিলা ছিল তড়িতা দত্ত। আর এখানে টিনা তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বেশ নেভেটিভ একটা দিক রয়েছে টিনার। তবে ফ্যাশনের ক্ষেত্রে সে সব সময় এগিয়ে। তা অবশ্য আমার লুক দেখেই বোঝা যাচ্ছে।'
তবে এখানেই অবাক হওয়ার শেষ হয়নি। 'দত্ত বাড়ির' আর এক সদ্য অভিনেত্রী শ্রীতমা বৈদ্যও এই মেগায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন। এই ধারাবাহিকে সে ‘রাগিনী চট্টোপাধ্যায়’-এর প্রিয় ছাত্রী। আর তাঁর লুক একেবারে রাজকীয়। তবে ছাত্রীকে যতটা ভালোবাসে 'রাগিনী' তার লেশমাত্রও ভালোবাসা নেই মেয়ের প্রতি। তাই মা-মেয়ের দ্বন্দের একটা দিক যে মেগায় উঠে আসবে তেমনটাই আভাস দিলেন নিশান্তিকা দাস। ধারাবাহিকে তাঁকে 'রাগিনী'র মেয়ের চরিত্রে দেখা যাবে। তাছাড়াও থাকছেন অনিন্দ্য বন্দোপাধ্যায়, এই মেগাতেও তিনি নেতিবাচক চরিত্রেই। এছাড়া থাকছেন ডান্স বাংলা ডান্স খ্যাত প্রিয়াঙ্কা বৈদ্য তাঁকে ধারাবাহিকে 'কল্পনা'-এর ভূমিকায় দেখা যাবে। সে পেশায় একজন মিউজিক র্যাপার। অন্যদিকে, 'ধী'-এর চরিত্রে থাকছেন অধিরাজ গঙ্গোপাধ্যায়। সোম থেকে রবি প্রতিদিন বিকেল ৫টা বেজে ৩০ মিনিটে ৫ মে থেকে শুরু হবে 'বুলেট সরোজিনী'র সম্প্রচার।