জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসী হামলার নিয়ে ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তা নিয়ে ইতিমধ্যে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে প্রশ্ন তুলেছেন। এই আবহে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডেলে ‘গায়েব’ পোস্ট ঘিরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন-মোতায়েন অ্যান্টি ফিদায়েন স্কোয়াড! জম্মু ও কাশ্মীরের ৪৮টি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ সরকারের
কংগ্রেসের ‘গায়েব’ পোস্টে স্পষ্টতই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করা হয়েছে। সেখানে কারও মুখ নেই, এমনকী অবয়বও নেই। আছে শুধু জামা, জুতো, অনেকটা হলোম্যানের মতো। কিন্তু তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর স্টাইল স্টেটমেন্টের সাদৃশ্য অতি স্পষ্ট। পাশাপাশি ছবিতে বড় বড় করে লেখা রয়েছে ‘গায়েব’। পোস্ট শেয়ার করার সময়েও কংগ্রেসের তরফে কটাক্ষ কর বলা হয়েছে, দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে গায়েব! ছবিটির পোশাক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বেশ মিলে যায়। বিজেপিও এই পোস্টের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেসকে কোণঠাসা করেছে। এর আগে কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে মোদীকে নিশানা করে বলেন, 'আমাদের দেশের দুর্ভাগ্য যে পহেলগাঁও হামলার পরে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যোগ দেননি। এটা লজ্জার। মোদী বিহারে নির্বাচনী সভায় বক্তৃতা করেন। কিন্তু দিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠকে আসতে পারেন না।'
অন্যদিকে কংগ্রেসকে পাল্টা জবাবে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন, 'কংগ্রেস এবং তার নেতাদের কী বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে তাদের পাকিস্তানের ভাষা বলতেই হবে? কেন আপনারা পাকিস্তানকে সমর্থন করছেন? ভারতীয়দের রক্তপাত দেখে কি আপনাদের রাগ হয় না? তাদের নেতা এবং প্রাক্তন ক্যাবিনেট মন্ত্রী সইফুদ্দিন সজ আমাদের বলছেন যে যখন পাকিস্তান বলছে যে তারা হামলার সঙ্গে জড়িত নয়, তখন আমাদের তাদের কথা শোনা উচিত এবং পাকিস্তানে জল সরবরাহ বন্ধ করা উচিত নয়। কংগ্রেস কার পক্ষে দাঁড়াবে? ভারত না পাকিস্তান? ভারত যখন সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল, তখনও কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছিল। পাকিস্তানপন্থী কংগ্রেসের মুখ আবার উন্মোচিত হয়েছে। কংগ্রেস নেতারা নানা ধরণের বক্তব্য রাখছেন এবং দলীয় নেতৃত্ব তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।'
বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এক্স বার্তায় বলেন, 'সার তন সে জুদা ছবিটি ব্যবহার করে কংগ্রেস কোনও সন্দেহের অবকাশ রাখেনি। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক বিবৃতি নয়, এটি মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ককে আকর্ষণ করার এবং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এক গোপন উস্কানি। কংগ্রেসের এই ধরণের কৌশলের ঘটনা এই প্রথম নয়। রাহুল গান্ধী বেশ কয়েকবার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হিংসাত্মক মনোভাবকে উস্কে দিয়েছেন। তবুও, কংগ্রেস কখনই সফল হবে না, কারণ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি লক্ষ লক্ষ ভারতীয়র ভালবাসা এবং আশীর্বাদ রয়েছে।' বিজেপি নেতা শেহজাদ পুনাওয়ালা বলেছেন, কংগ্রেসের পোস্ট প্রমাণ করেছে যে এটি সেই দেশের পাকিস্তান পিপলস পার্টির সংক্ষিপ্ত রূপে পরিণত হয়েছে। যার সদস্য ফওয়াদ আহমেদ হুসেন চৌধুরি।
আরও পড়ুন-মোতায়েন অ্যান্টি ফিদায়েন স্কোয়াড! জম্মু ও কাশ্মীরের ৪৮টি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ সরকারের
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার পরেই সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় কংগ্রেস মোদী সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিল। কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকে সন্ত্রাসের মোকাবিলার প্রশ্নে সরকারের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তারপরেও কংগ্রেসের বিভিন্ন নেতা পহেলগাঁও হামলা নিয়ে বিভিন্ন রকমের মন্তব্য করছেন। তা নিয়ে বিরক্ত কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে ও রাহুল গান্ধী কংগ্রেস নেতাদের মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। কংগ্রেসের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দলীয় মুখপাত্রদের বাইরে যে যা বলছেন, তার কোনওটাই দলের অবস্থান নয়।